
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ার গলা টিপে ধরতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর আলোচনা নয়, এবার দেশটির বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় তারা।
পিয়ংইয়ং এক মাসের মধ্যে দুইবার আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার পর অধৈর্য হয়ে উঠেছে ওয়াশিংটন। কড়া বামঘেঁষা ও দরিদ্র উত্তর কোরিয়ার বাগাড়ম্বর ও হামলার হুমকি মেনে নিতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র। এখনই কিম জং-উনের লাগাম টেনে ধরে তাকে ধরাশায়ি করতে চায় তারা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রোববার বলেছেন, উত্তর কোরিয়া নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করার কোনো মানে নেই। এর অর্থ দাঁড়ায়, উত্তর কোরিয়া মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার নেই।
এক বিবৃতিতে নিকি হ্যালি বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর চাপ সৃষ্টি করতে পারে না- নিরাপত্তা পরিষদের এমন প্রস্তাবের কোনো মনে হয় না।’ চীনের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, চীনকে আগে ঠিক করতে হবে- উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আসলেই তারা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় কিনা।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, চীন চাইলে উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা থেকে ঠেকাতে পারে। কারণ পিয়ংইয়ংয়ের সবচেয়ে ঘনিষ্ট মিত্র বেইজিং। কিন্তু তারা তা করছে না। শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। একদিন পর নিকি হ্যালি চীনের উদ্দেশে বলেছেন, ‘চীনকে ঠিক করতে হবে, শেষ পর্যন্ত তারা কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় কিনা। এ নিয়ে আলোচনার দিন শেষ।’
নিকি হ্যালির বিবৃতির পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা কূটনৈতিক মিশন।
উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৪ জুলাই পিয়ংইয়ং প্রথম আইসিবিএম পরীক্ষার পর নিকি হ্যালি চীনকে প্রস্তাবের একটি খসড়া দেন। গত মঙ্গলবার তিনি দাবি করেন, ‘এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বোঝাপড়ার অগ্রগতি হয়েছে।’ কিন্তু শুক্রবার আবারো উত্তর কোরিয়া আইসিবিএম পরীক্ষা করার পর সুর পাল্টেছেন তিনি।
এর মধ্যে সোমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। উত্তর কোরিয়ার হুমকি থেকে জাপানের জনগণকে রক্ষায় ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির ভূয়সী প্রশংসা করেন শিনজো আবে।
শুক্রবার উত্তর কোরিয়া নতুন ও দ্বিতীয় আইসিবিএম পরীক্ষার পর দাবি করে, সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আওতার মধ্যে। এর জবাবে কোরীয় উপদ্বীপের আকাশে দেখা যায় দুটি মার্কিন বোমারু বিমান। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমানের সঙ্গে একযোগে কোরীয় উপদ্বীপ প্রদক্ষিণ করে বিমান দুটি।
তথ্যসূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইন