
নিজস্ব প্রতিবেদক : একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। তবে এদিন তা শেষ হয়নি। বিচারক আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এএসপি মুন্সি আতিক, এএসপি আব্দুর রশিদ, বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন মূল আসামিদের আড়াল করার জন্য ‘জজ মিয়া’ নাকট সৃষ্টি করে এ মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন। তাদের তদন্তকালে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান গ্রেপ্তার হলেও এবং হামলার সম্পৃক্ততার কথা জানালেও তারা মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তার করেনি এবং স্বীকারোক্তি এ মামলায় লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা করেনি। বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, তৎকালীন এডিশনাল আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরী ও মুন্সি আতিক, আব্দুর রশিদ, রুহুল আমিন যোগসাজসে এ কাজ করেছেন। এ মামলায় গ্রেনেড সরবরাহকারী তাজউদ্দিনকে বাদল নামের পাসপোর্ট দিয়ে ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন এবং লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পিএস-১ সাইফুল ইসলাম ডিউকের সহায়তায় তাজউদ্দিনকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেন। এভাবে প্রশাসনিক সহায়তায় মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর মামলাটিতে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।
মামলাটিতে গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি হয়। শুনানিতে ৩১ আসামির সবাই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ জন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।
মামলাটিতে আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন।
অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক। এ মামলার আসামি মুফতি হান্নান ও আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের নির্মম মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক।