লালমনিরহাটে পরিবারের অসুস্থ্য তিন ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকার ও বৃত্তবান কাছে এক অসহায় পিতার আবেদন

এস এম আলতাফ হোসাইন সুমন লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার এক পাড়া গাঁয়ের বাসিন্দা আজিমুদ্দিন। পরিবারের আট জন সদস্য নিয়ে তার বসবাস। এই অসহায় পরিবারটির উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি মাত্র একজন। জীর্ণশীর্ণ ভাঙ্গা কুটিরে তাদের বসবাস। জীবন চলে খুবই অভাব অনাটনের মধ্যে। একবেলা খেলে আর এক বেলায় থাকেন না খেয়ে। এরই মাঝে দীর্ঘদিন যাবত কঠিন রোগে ভুগছে পরিবারের ৩ জন। চিকিৎসা করা তো দুরের কথা, অর্থাভাবে আজও কোন ডাত্তারকে দেখাতেই পারেননি আজিমুদ্দিন।

অথচ একই ইউনিয়নেই ক্ষমতাসীন দলের নেতা, প্রভাবশালী এমপি, শিল্পপতি ও একজন বিচারপতির বাড়ি। বাস করছেন কয়েকজন কোটি পতি। এরপরেও ওই অসহায় পরিবারটির খোঁজখবর রাখার যেন কেউ নেই।

বিশ্ব মানবতার কড়াল গ্রাসে চাপা পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এমন অসংখ্য অসহায় পরিবার। যাদেরও রয়েছে খাদ্য, বস্ত শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবার পাওয়ার মত মৌলিক অধিকার।

এরপরেও থেমে নেই পৃথিবী, থেমে থাকবেনা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অসহায় হাজারও পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর মত মানুষ। নিশ্চয় তাদের পাশে এগিয়ে আসবেন আপনার আমার মতো অসংখ্য ভালো মানুষ।

জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পুর্ব সাড়ডুবি গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডে এমনি একটি পরিবারের সন্ধ্যান মিলেছে।

ফাস্টফুড, চাইনিজসহ উন্নত খাবার খেতে অনেকেই লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা খরচ করে থাকেন। অনেকেই ফাইভ স্টার হোটেলে বা নাইট ক্লাবে   সুন্দরী রমণী, মডেল ও বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে আমোদ ফুর্তিতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন। অনেকেই বিলাশ বহুল আলিসান গাড়ি, বাড়ি নির্মাণ করতে   শত শত কোটি টাকা খরচ করে করে থাকেন। অনেকেই তাদের কঠিন রোগ তো দুরের কথা সামান্য মাথা গরম বা আঙুলের ব্যথার কারনে বিদেশ গিয়ে লাক্ষ লাক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসার বিলাসিতা করে। এ সবই আমরা জানি কিন্তু আমরা এটা জানিনা, এই দেশে এখনো অনেক অভাবগ্রস্ত অসহায় পরিবার আছেন যাদের ভাগ্যে দিনে এক বেলার খাবারও জোটেনা, অর্থাভাবে পরিবারের অসুস্থ্য ব্যাক্তিদের ডাক্তার দেখাতে পর্যন্ত পারছেন না। নিদারুণ কষ্টে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন দিনের পর দিন। আর এই অসহায় মানুষগুলোর জীবন বৈচিত্র্য নিয়ে কারও ভাব্বার সময় পর্যন্ত নেই। মানুষের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। যেটা প্রতিনিয়ত সংবাদ পত্রের পাতায় উঠে আসছে প্রতিনিয়ত।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে, ঐ উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নর (মিলন বাজারের পাশে) পুর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকার মৃত্যু আমানতুল্লাহর ছেলে আজিমউদ্দিন (৭৫)কে । যার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আগে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে কোন রকমে সংসার চালাতেন। বয়স হওয়ায় এখন আর কেউ তাকে কাজে নেন না। বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বড় ছেলে আবদুর রাজ্জাক মিন্টু (৪০)। সে ঢাকায় ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে কোন রকম ভাবে সংসার চালায়।
ছোট ছেলে আশরাফুল আলম (৩৩) দীর্ঘদিন যাবত মাথার সমস্যায় ভুগছে। সে সব সময়  আবল তাবল বকে এবং মানুষকে ডাংমার করায় তাকে ছিকল দিয়ে বেধে রাখা হত। এখন অবশ্য তা নেই।

 আবদুর রাজ্জাক মিন্টুর  দুটি ছেলে। এর মধ্যে সাইফুর রহমান (১৩) জন্ম পর থেকেই চিৎকার করে ও সব সময় ঘাড় নারে, মাটিতে গড়াগড়ি করে। ছোট ছেলে রহমত (৫) চোখের সমস্যা এক দিকে তাকিয়ে থাকে।

৩ শতক জমির উপর জীর্ণশীর্ণ ভাঙ্গা কুটিরে বসবাসরত পরিবারটি পায়নি কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানও রাখেন না তাদের কোন খোজ খবর।

অসুস্থতাজনিত ঐ ৩টি ছেলের রোগ ও চিকিৎসার বিষয় জানতে চাইলে বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, বাবারে আমাদের বেচে থেকে কোন লাভ নেই। এতো কষ্টের চাইতে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। অসুস্থ এই ৩টি ছেলের চিকিৎসা করা তো দুরের কথা, ডাক্তারকে দেখাব সে টাকাই নেই।  বড় ছেলে মিন্টু রিকশা ভাড়ায় চালিয়ে সামান্য যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসারই চলে না। এর পরে তাদের চিকিৎসা করাব কি ভাবে। তিনি তার ছেলে আশরাফুল আলম সম্পর্কে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সে মাথার সমস্যায় ভুগছে। কবিরাজি চিকিৎসা করায় কিছুটা সুস্থ্য হলে তার ছিকল খুলে দেওয়া হয় কিন্ত কিছু দিন পর সে পূর্নরায় আগের মতো আচরন করছে।

 বৃদ্ধ আজিমুদ্দিন আরও বলেন, আমার দুটি নাতি। এর মধ্যে সাইফুর রহমান জন্ম থেকে চিৎকার করে, সব সময় ঘাড় নারে, মাটিতে গড়াগড়ি করে, কিছুই খেতে চায়না। শুধু কাদে আর কাদে। আর রহমত (৫) চোখের সমস্যা এক দিকে তাকিয়ে থাকে। রাস্তা হাটতে উল্টে পড়ে।

বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন সমাজের বিত্তবানদের কাছে  আকুল আবেদন করে বলেন, পরিবারের অসুস্থ্য তিন সদস্যের চিকিৎসা করানোর মত সামর্থ্য আমার নেই। তাই সরকার অথবা সমাজের বিত্তবানদের  নিকট চিকিৎসার খরচের জন্য সাহায্যের আবেদন করছি। যোগাযোগ ছেলে মিন্টু- ০১৭৯০৫৪১৩৮৪। প্রতিবেশী মিজান  ০১৭৩৭৬৮২৫৬০।