
নিজস্ব প্রতিবেদক : এক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ হওয়ার পর পুলিশকে বিভ্রান্ত করে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আইনজীবীরা। কিন্তু আদালতের নির্দেশে আসামিকে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার হাইকোর্টে এই ঘটনার পর আদালতের নির্দেশে এজলাসে আটকে থাকতে হয়েছিল ওই আইনজীবীদের। পরে আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে সেই আসামিকে ফেরত এনে পুলিশের হাতে বুঝিয়ে দেওয়ার পর ছাড়া পান তারা।
বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিনের জন্য এসেছিলেন আব্দুল কুদ্দুস।
ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল কুদ্দুস একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় আদালতে আগাম জামিন নিতে এসেছিলেন। কিন্তু আদালত তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দায়িত্বরত পুলিশ আসামিকে কারাগারে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার সময় আসামির আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার পুলিশকে বিভ্রান্ত করে শীর্ষ এই সন্ত্রাসীকে ছাড়িয়ে নেন এবং আদালত চত্বর ত্যাগ করতে বলেন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আদালতের নজরে আনলে আদালত বাসেত মজুমদারকে তলব করেন। সঙ্গে সঙ্গে আইনজীবী বাসেত মজুমদার এজলাস কক্ষে হাজির হলে কোর্ট তাকে ভর্ৎসনা করেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে বলেন।
বাসেত মজুমদার এই সময় নীরব থাকেন। তিনি শুধু বলেন, ‘এই মামলা তার নয়। এটি এক জুনিয়র আইনজীবীর।’ আদালত তখন বলেন, ‘আসামিকে পুলিশের জিম্মায় দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী রেজাউল করিমকে আসামির বদলে কারাগারে যেতে হবে।’ এ সময় বাসেত মজুমদারও আটকে থাকেন এজলাসে।
এ পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন আদালত কক্ষে এসে বাসেত মজুমদারের পক্ষে ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করেন এবং আসামিকে হাজির করার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রায় আধাঘণ্টা পর আসামিকে হাজির করা হয়।তাকে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার পর এজলাস কক্ষ থেকে বের হওয়ার অনুমতি পান বাসেত মজুমদার ও আসামির আইনজীবীরা।
পরে আদালত পুলিশ আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় করা মামলার আসামি কুদ্দুসকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে।
গত ১২ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামী থানায় কুদ্দুসসহ ২৮ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলাটি হয়।
মামলার বিররণ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় চলতি বছরের ১২ এপ্রিল বায়েজিদ বোস্তামি থানায় আব্দুল কুদ্দুসসহ ২৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। ওই মামলায় জামিন নিতে এসেছিলেন আসামি কুদ্দুস। এছাড়া বায়েজিদ এলাকার যুব সংগঠক কর্মী মেহেদী হাসান বাদল হত্যা মামলারও আসামি তিনি।