
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লায় অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে হৃদয় নামের এক স্কুলছাত্রকে খুন করে লাশ তিতাস নদীতে ফেলে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
নিহতের নাম আবু তাহের হৃদয়। সে তিতাস উপজেলার আকালিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বশির আহম্মেদের একমাত্র ছেলে। সে বাতাকান্দি সরকার সাহেব আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
সোমবার সকাল থেকে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারে তিতাস নদীতে ডুবুরি দিয়ে তল্লাসি শুরু করে। মঙ্গলবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশের সন্ধান মেলেনি।
পুলিশ ও হৃদয়ের স্বজনদের সূত্র জানায়, গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে তিতাসের আকালিয়া গ্রামের খেলার মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলতে যায় হৃদয়। রাত সাড়ে ১০টার পরও সে বাড়ি ফিরে না আসায় তার বাবা-মা বিভিন্ন স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ করতে থাকেন। পরের দিন একটি মোবাইল ফোন থেকে ফোন করে জানানো হয় হৃদয় অপহরণকারীদের হেফাজতে রয়েছে এবং ছেলেকে ফেরত পেতে তার বাবার নিকট ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে হৃদয়কে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর হৃদয়ের বাবা বশির আহমেদ বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে অপহরণের অভিযোগে একই উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য রেনু মিয়ার ছেলে রিয়াদ হোসেন (২০), আকালিয়া গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩০), গুনপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে সাকিব (২২) ও নজরুল ইসলামের ছেলে মহিন আহমেদকে (২৪) আটক করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিতাস থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো.শহিদুল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হৃদয়কে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। অপহরণকারীদের দাবিকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা হৃদয়কে হত্যা করে বস্তায় ভরে লাশ তিতাস নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে জানায়।পুলিশ নিহত হৃদয়ের লাশ উদ্ধারে তিতাস নদীতে ডুবুরি দিয়ে তল্লাসি চালিয়ে যাচ্ছে।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মো. মনিরুল ইসলাম জানান, আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুসারে তিতাস নদীতে ডুবুরি দিয়ে লাশের সন্ধান চালানো হচ্ছে। লাশ উদ্ধার এবং ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে তিতাস নদীর পাড়ে হৃদয়ের স্বজন ও স্কুলের সহপাঠীসহ এলাকার শোকার্ত হাজারো মানুষ ভিড় করেছেন। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।