‘জাতীয় বননীতি প্রণয়নের কাজ চলছে’

সচিবালয় প্রতিবেদক : জাতীয় বননীতি প্রণয়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল জ্যাকব।

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৭ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বন উপমন্ত্রী বলেন, বন মহাপরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে এই জাতীয় বননীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বনাঞ্চলকে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম টেকনোলজি প্রযুক্তির মাধ্যমে টেকসই বন ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে বন ইকোসিস্টেমের সেবার অবদান নিরূপণের কার্যক্রম বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে।

পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর উপস্থিতিতে উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল জ্যাকব বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের আঘাত মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে। একটি উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘পরিবেশ সুরক্ষা’। বর্তমান পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পবিত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা, একনিষ্ঠতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য তিনি ২০১৫ সালে পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার চ্যাম্পিয়ন অব আর্থ অর্জন করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন।

পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জনসচেতনতার বিকল্প নেই জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করা জন্য আমাদের সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। জনমত ও জনসচেতনতার জন্য সরকার ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

বিশেষ করে দিবসটি উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে তিন মাসব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান আগামী ৪ জুন সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধন করবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী দেশের জাতীয় পরিবেশ পদক, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ করজারভেশন’ ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ এবং সামাজিক বনায়নে সুবিধাভোগীদের মধ্যে চেক বিতরণ করবেন।

তাছাড়া দিবস উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তর থেকে স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এবং সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা, র‌্যালি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে ১০০টি সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ দিবস উদযাপন, সব মোবাইল ফোন অপারেটরের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ, ঢাকাসহ প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় পরিবেশবিষয়ক তথ্য প্রচার, জেলা-উপজেলায় বৃক্ষমেলা আয়োজন, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রচনা প্রতিযোগিতা, জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ নানা কর্মসূচি থাকছে বলেও জানান আবদুল্লাহ আল জ্যাকব।

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় বৃক্ষরোপণ অভিযান এক নতুন গতি লাভ করেছে। বৃক্ষরোপণ অভিযানে এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- বৃক্ষরোপণ করে যে, সম্পদশালী হয় সে’।

তিনি বলেন, এ বছর বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণের ব্যাপক কাযক্রমসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। নতুন নতুন বৃক্ষ প্রজাতির সঙ্গে পরিচয়, নতুন বনায়ন কৌশল আদান-প্রদানসহ উন্নতমানের চারা সংগ্রহের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ অভিযান সার্থক করতে জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন সহায়ক হবে।

উপমন্ত্রী বলেন, বনজীবীদের বিকল্প আয়ের সুযোগ তৈরি করে বন ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সারাদেশে বৃক্ষ ও বনজরিপ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।