পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে অভিজাত পরিবারের সন্তানরা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে অভিজাত পরিবারের সন্তানরা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে।’

রোববার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ১৪ দেশের পুলিশ প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন। ইন্টারপোল ও বাংলাদেশ পুলিশ এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনের প্রতিপাদ্য- চিফ অব পুলিশ কনফারেন্স অব সাউথ এশিয়া অ্যান্ড নেইবারিং কান্ট্রিজ অন রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন কার্ভিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম।

সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের অতি দরিদ্র মানুষের বেশিরভাগই সমাজের মূলধারায় মিশতে পারে না। অন্যদিকে অভিজাত পরিবারের সন্তানরা পশ্চিমা সংস্কৃতি অনুকরণ করে। ফলে তারাও সমাজের সঙ্গে মিশতে পারে না। জঙ্গিরা এই দুই শ্রেণির মানুষকে সহজে বিচ্ছিন্নতাবাদের দিকে নিতে পারছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশ সরকার জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’

এই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর উগ্রপন্থী ও বামপন্থীদের উত্থান হয়। বর্তমানে বিপথগামী কিছু ধর্মীয় উগ্রপন্থী সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে।’

সম্মেলনে ব্লগার হত্যা, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি নির্মূলে কাউন্টার টেররিজমের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন মনিরুল ইসলাম।  তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ ও সিটিটিসি জঙ্গি দমনে একসঙ্গে কাজ করছে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে আমার সদা তৎপর।’

রোববার সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড. কামাল উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক, ইন্টারপোলের জেনারেল সেক্রেটারি জার্গের স্টোক প্রমুখ।

সম্মেলনে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনেই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া ইন্টারপোল, ফেসবুক, ইন্টারপোল গ্লোবাল কমপ্লেক্স ফর ইনোভেশন (আইজিসিআই), যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ট্রেনিং অ্যাসিসট্যান্স প্রোগামসহ (আইসিআইটিএপি) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।