বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস

 নিউজ ডেক্স: ২০০৬ থেকে ২০১৭। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টেছে ১১ বার। ১১ বছর শুধু একটা সংখ্যা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এ ১১ বছর কোনো সংখ্যা নয়। অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষা, পরিশ্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ১১ বছর!

এ ১১ বছরে বাংলাদেশ হাঁটি-হাঁটি পা পা করে ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে নিজের অস্তিতে তুলে ধরেছে। ছোট ছোট সুখ গুলোকে ধীরে ধীরে বড় অর্জনের খাতায় তুলে ধরেছে। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ২ রানে হারের পর অশ্রুশিক্ত কন্ঠে মুশফিকুর রহিম বলেছিলেন,‘এতো আমাদের শুরু। আমাদের উপর আস্থা রাখুন, বিশ্বাস করুন। সামনে আমাদের আরও ভালো সময় অপেক্ষা করছে।’

মুশফিকের কন্ঠে সুর মিলানো ক্রিকেট পাগল জাতি আজ গর্ব করছে বাংলাদেশকে নিয়ে। হাঁটতে শেখা বাংলাদেশ আজ দৌড়াচ্ছে বিশ্বমঞ্চে। আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ এখন নম্বর সিক্সের টিম।   

২০০৬ আইসিসি মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা। ১১ বছরের ব্যবধানে আজ সেই একই মঞ্চে লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেই। আছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। সেদিন লারা বাংলাদেশের সামর্থ্য নিয়ে অবজ্ঞা করেছিলেন। কিন্তু আজ মুদ্রার ওপিঠে বাংলাদেশকে নিয়ে গুনগান করছেন।

আগামীকাল পর্দা উঠছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। হট ফেবারিট না হলেও চমকে দেয়ার প্রত্যায় নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ১১ বছর পর বাংলাদেশ আবারও খেলছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। এরপর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের নাম লিখিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে শক্তি ও সামর্থ্যের। এবার তিন বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াইয়ের পালা। বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ চমকে দিতে পারে। টাইগারদেরও বিশ্বাস তারা চমকে দিতে পারবে।

ব্যাটিং-বোলিং সবদিক থেকেই বাংলাদেশ শক্তিশালী। তবে ব্যাটিং বিভাগই এগিয়ে থাকছে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানদের উপর ব্যাটিং নির্ভর করছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে সৌম্য, সাব্বির ও মোসাদ্দেকরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্যূতি ছড়ানো শুরু করা মেহেদী হাসান মিরাজও রয়েছেন। সব মিলিয়ে ব্যাটিংয়ে পুরো দলই ব্যালেন্স। তবে ভালো ফল পেতে হলে অবশ্যই তামিম, সাকিব, মুশফিক, সাকিবদের জ্বলে উঠতে হবে।

বোলিংয়ে ১৭৩ ওয়ানডে খেলার মাশরাফি বিন মুর্তজা রয়েছেন। সাথে আছে মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন। দারুণ ছন্দে আছেন রুবেল হোসেন। ইংলিশ কন্ডিশনে দারুণ বল করছেন ডানহাতি এ পেসার। ২০১৫ বিশ্বকাপের মতো রুবেল এবার ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারেন। তবে সবার চোখ থাকবে মুস্তাফিজুর রহমানের দিকে। বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টের বড় কোনো আসরে এবারই মুস্তাফিজ প্রথম খেলতে যাচ্ছেন। দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করা মুস্তাফিজ বিশ্বমঞ্চে কেমন করে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

দলের সামর্থ্য থাকলেও কন্ডিশন সবথেকে বড় বাঁধা বাংলাদেশের। ২০১০ সালের পর এ কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা নেই কোনো ক্রিকেটারের। তামিম-সাকিব কাউন্টি ক্রিকেট খেললেও তা দীর্ঘদিন আগের কথা।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের একমাত্র জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে। ১১ বছর পর একই মঞ্চে বাংলাদেশ বড় কোনো দলকে হারাবে, এমনটাই বিশ্বাস হাজারো ক্রিকেটপ্রেমির।

বাংলাদেশের ম্যাচ:

১ জুন: প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড
৫ জুন: প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া
৯ জুন: প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড