বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেঃ রাশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করেছে  ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলনে রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ও রাশিয়ান পার্লামেন্টের ডেপুটি চেয়ারম্যান ইলিয়েচ আমাখানভ।

বুধবার আইপিইউ সম্মেলনের শেষ দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) স্পিকার ও ১৩৬তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলির সভাপতি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের নীতির প্রশংসা করেন তিনি।

সাক্ষাৎকালে স্পিকার রাশিয়ার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দীর্ঘদিনের। পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে পারষ্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় দুই দেশের সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।’

এ সময় সেন্ট পিটার্সবার্গে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং সমবেদনা প্রকাশ করেন শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন, যা এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

স্পিকার আরো বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে রাশিয়ার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই রাশিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাশিয়ার অবদান অনস্বীকার্য।’

এ সময় ইলিয়েচ আমাখানভ বলেন, ‘বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলভাবে ১৩৬তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি আয়োজন করেছে। রাশিয়া আগামী ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর আইপিইউর ১৩৭তম  অ্যাসেম্বলি আয়োজন করতে যাচ্ছে। সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিতব্য এ অ্যাসেম্বলিতে বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করি।’

এ সময় রুশ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে আরো কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

স্পিকার এ সময় বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ, পাটজাত দ্রব্য, ওষুধ, তৈরি পোশাক শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও চামড়া শিল্পে রাশিয়ার বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

পরে নামিবিয়ার স্পিকার ও প্রতিনিধিদলের প্রধান পিটার এইচ কাজাভিভির নেতৃত্বে দেশটির প্রতিনিধিদল স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় স্পিকার দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। নামিবিয়ার স্পিকার বাংলাদেশের স্পিকারকে সে দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

প্রসঙ্গত, আজ বুধবার ‘ঢাকা ঘোষণা’র মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে আইপিইউর ১৩৬তম অ্যাসেম্বলি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও আইপিইউ ছিল এ সম্মেলনের আয়োজক। শনিবার ১৩১টি দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, এমপিসহ প্রায় দেড় হাজার ডেলিগেট নিয়ে আইপিইউর সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।