
সংসদ প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ ও স্বল্প বেতনের মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। নিম্ন আয়ের মানুষকে অব্যাহতি দিয়ে ধনাঢ্যদের ওপরে কর আরোপ করা হোক। সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিটের ওপর কর আরোপ করা ঠিক হবে না।’
বুধবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি কেবিনেটের সদস্য। কেবিনেটে এই বাজেট পাস হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কথা বলা নৈতিকতাবিরোধী। তবে আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের কথা বলতে হবে।’ সঞ্চয়পত্রের সুদ না কমানোরও দাবি জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক।
প্রায় একই দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ। তিনি বলেন, ‘সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বেড়েছে। আর্থ-সামজিক অবস্থা, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিম্ন পর্যায়ে থাকাসহ সকল প্রেক্ষিত বিবেচনায় বাংলাদেশ অবশ্যই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সক্ষম হবে। তবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ব্যাংক সঞ্চয়ে অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ১ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক গ্রাহকদের ওপর বাড়তি হারে আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেন। যেখানে বছরের যেকোনো সময় ব্যাংক হিসাবে ১ লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরো বাড়ানো প্রয়োজন। কৃষকদের জন্য শস্য বীমা এবং আপৎকালীন সময়ে অভিবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের জন্য অভিবাসী বীমা চালুর প্রস্তাব করেন। মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় এনে এটিকে করমুক্ত করার দাবি জানান।
বাজেট নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্য প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার দুর্নীতি লুটপাটে বিশ্বাস করে না। তারাই (বিএনপি) লুটপাটের জন্য হাওয়া ভবন ও খোয়াব ভবন চালু করেছিলেন। বিএনপি মানুষের গলায় হাত দিয়েছিল। কিন্তু শুল্ক আদায় করে বর্তমান সরকার তা মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে। তিনি সকল ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণ না করে খাত ভিত্তিক বিবেচনায় তা নির্ধারণের সুপারিশ করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অধিবেশনের শুরু হয়।
বুধবার বাজেট আলোচনায় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, টিপু মুন্সী, ফাতেমা জোহরা রাণী, আনোয়ারুল আবেদীন খান ও জাতীয় পার্টির এ কে এম মাইদুল ইসলাম অংশ নেন।