বিদ্যুৎকেন্দ্রে নাশকতায় সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা জরিমানা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিদ্যুৎকেন্দ্রে নাশকতা করলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে বিদ্যুৎ আইন-২০১৭ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

নতুন আইনে বিদুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে এবং অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান থাকছে। তা ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য ইনডিপেনডেন্ট সিস্টেম অপারেটর নামে একটি সংস্থাও গঠন করা হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিদ্যুৎ আইন-১৯১০ হালনাগাদ করা হয়েছে। আইনে অপরাধের নতুন শাস্তি যোগ হয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে।’

বিদ্যুৎকেন্দ্রে নাশকতায় শাস্তির কথা উল্লেখ করে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রে নাশকতা করে কিংবা কোনো উপকেন্দ্রে ভাঙচুর চালায় তাহলে তার সর্বনিম্ন সাত বছর ও সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে বিচারক তাকে এই অপরাধে সাত বছরের নিচে জেল দিতে পারবেন না।’

আইনে বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী আইন লঙ্ঘন করলে তার জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, এ কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পিডিবি, ডেসকো, ডেসা তথা বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কর্মকর্তা আইনের শর্ত ভঙ্গ করে কিংবা এলাকার বাইরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে ১ বছরের জেল এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আইনের ৪৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো বিদ্যুৎ কর্মচারী অনিয়মে জড়িত হলে, কিংবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনিয়মে সহায়তা করলে তাহলে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’

বিদ্যুৎ চুরি বন্ধের বিধান প্রসঙ্গে শফিউল আলম বলেন, ‘কেউ যদি বাসায় বিদ্যুৎ চুরি করেন কিংবা হুকিং করেন তবে তার ৩ বছরের জেল, চুরি হওয়া বিদ্যুৎ বিলের দ্বিগুণ কিংবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ চুরি করলে ৫ বছরের জেল, ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা চুরি হওয়া বিদ্যুতের দ্বিগুণ জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তা ছাড়া মিটার টেম্পারিং অপরাধে ৩ বছরের জেল, ৫ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চুরি কিংবা নষ্ট করা হলে সর্বনিম্ন ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তা ছাড়া চুরি করা মালামাল জমা রাখলে ২ বছরের জেল, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান করা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনের ৫ ধারায় ইনডিপেনডেন্ট সিস্টেম অপারেটর নামের একটি সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটির কাজ হবে বিদ্যুতের লোড ব্যবস্থাপনা করা।