সাংবাদিক শিমুল হত্যার দুই মাস পর মিরুর বিরুদ্ধে মামলা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সাংবাদিক শিমুল হত্যার দিনের সংঘর্ষের ঘটনার দুই মাস পর এবার মেয়র মিরুর পক্ষে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৪ ধারায় মামলাটি করেন কারাগারে আটক মেয়র হালিমুল হক মিরুর স্ত্রী লুৎফুন নেছা পিয়ারী।

মামলায় মিরুর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর কথা উল্লেখ করা হয়।

মামলায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র নাসির আহমেদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজলসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে লুৎফুন নেছা পিয়ারী শাহজাদপুর উপজেলা আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার শুনানি শেষে বিচারক হাসিবুল হক শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শাহজাদপুর থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া জানান, মামলা দায়েরের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তবে এখনও এজাহারের কপি হাতে পাননি।

মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন শাহজাদপুর পৌর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ভিপি মো. আব্দুর রহিম, যুবলীগ নেতা দিনার, ছাত্রলীগ কর্মী মাসুদ, সোহেল, জাহান, জীবন, রাসেল, এরশাদ, তরিকুল, শাহ আলম, আল মাহমুদ, বিপ্লব, আল আমিন, রনি ও সেলিম।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরুর সঙ্গে নির্বাচনে পরাজিত হন শাহজাদপুর পৌর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ভিপি মো. আব্দুর রহিম।

নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মেয়র মিরুকে হত্যার চেষ্টাসহ শত্রুতা ও আক্রোশ পোষণ করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এরই জেরে গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র, পিস্তল, ককটেল, রামদা, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হালিমুল হক মিরুকে হত্যার উদ্দেশে তার বাড়ি ঘেরাও করে বাড়ির অন্যান্য লোকজনদের হত্যার হুমকি দেয় এবং বাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে।

আসামিদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দ্বারা এলোপাথাড়িভাবে গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ভিপি আব্দুর রহিমের হুকুমে ছাত্রলীগ নেতা কাজল ও মাসুদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করে।

গুলিতে মেয়রের বাড়িতে থাকা সাহেব আলী, জহির আলী, কালু ও মানিক নামে তিন ব্যক্তি আহত হয়। এ সময় বাড়ির লোকজন আসামিদের বাধা দিলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়লে অনেক পথচারী ও সাংবাদিক শিমুল আহত হয়।

মেয়রের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুই লাখ টাকা ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। সাক্ষীরা চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরে দুগ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিবিদ্ধ হন। পরে শিমুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এই ঘটনায় ৪৩ জনকে আসামি করে নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন নাহার বাদী হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু, তার ভাই মিন্টু, প্রাক্তন কাউন্সিলর পিজুস, আওয়ামী লীগ নেতা নাসিরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ জনকে আসামি করা হয়।