নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে শুরু হলো মাসব্যাপী ১৭তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ-২০১৬।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত চারুকলাবিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রদর্শনী হলো ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ’।
রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে মাসব্যাপী এ প্রদর্শনী ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিশাল ইতিহাস রয়েছে। জয়নুল আবেদীন, কামরুজ্জামানসহ দেশের অনেক গুণী চিত্রশিল্পী আমাদের চিত্রশিল্পকে আলোকিত করেছেন।’ তরুণ চিত্রশিল্পীরাও এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বক্তব্যে ১৯৮১ সাল থেকে শুরু হওয়া এ চারুকলা প্রদর্শনী অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পোর্কন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এ আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংস্কৃতিমনা জাতি হিসেবে আমাদেরকে বিশ্বসভায় তুলে ধরতে পারব এবং এর ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে। আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশে এ প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এ সময় তিনি মঙ্গলশোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করায় ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পকর্মের মধ্যে থেকে প্রতিবছরের মতো এবারো নয়জন শিল্পীকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা মূল্যের তিনটি গ্রান্ড পুরস্কার এবং ৩ লাখ টাকা মূল্যের ছয়টি সম্মাননাসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কারের জন্য শিল্পকর্ম নির্বাচন করেন পাঁচসদস্যের এক জুরি বোর্ড। বাংলাদেশ, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও জাপানের শিল্পীদের নিয়ে এ জুরিবোর্ড গঠন করা হয়।
এবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৪টি দেশ এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে ৫৫৬ জন শিল্পীর মধ্যে বাছাই করে ১৪৮ জন শিল্পীর ১৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ৫৪ জন আমন্ত্রিত চিত্রশিল্পীর ৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পাচ্ছে। অন্যদিকে প্রদর্শনীতে স্থান পাচ্ছে ৫৩টি দেশের ১৫০ জন শিল্পীর ২৬০টি শিল্পকর্ম। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো থেকে শিল্পী, শিল্প সমালোচক, মিউজিয়াম কিউরেটরসহ মোট ১৪৫ জন বিদেশি এ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ অংশগ্রহণকারী অন্য দেশগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, অষ্ট্রেলিয়া, অষ্ট্রিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, বুলগেরিয়া, কম্বোডিয়া, কানাডা, চিলি, চীন, কলোম্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, উত্তর কোরিয়া, মিশর, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কুয়েত, লেবানন, লুক্সেমবার্গ, মালোয়শিয়া, মরিশাস, মায়ানমার, নেপাল, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, পেরু, ফিলিপাইনস, পোল্যান্ড, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, রি-ইউনিয়ন আইল্যান্ডস, রাশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সাউথ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্কো, ইংল্যান্ড, আমেরিকা এবং ভিয়েতনাম।