নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়াতে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনীর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া একই বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-’র খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়াতে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনীর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিধির মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় এই সংশোধনী আনতে হচ্ছে। এর ফলে একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে শুরু করে পরবর্তী ২৫ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত আসনের বিধি কার্যকর থাকবে।

প্রসঙ্গত, সংবিধান অনুযায়ী ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ জন এবং সংসদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

সংবিধানের ৬৫ (৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করিয়া দশ বৎসর কাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাঙ্গিয়া না যাওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশটি আসন কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে …।’

এর আগে ২০০৪ সালে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনে নারী আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। তখন এর মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ, নবম সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে দশ বছর। সে সময় সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষিত নারী সদস্যের ৪৫টি আসন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। সে হিসেবে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের মেয়াদ আছে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।

অবশ্য ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী সদস্যদের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হলেও তখন মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এখন সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বছরখানেক হাতে থাকতেই আইন সংশোধনের এই উদ্যোগে নিল সরকার।

সংবিধান সংশোধনের এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় তা এখন বিল আকারে পাঠানো হবে জাতীয় সংসদে। সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগে। সংসদে এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৩২টি আসন রয়েছে।