
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘প্রতিটি বিভাগের সফলতার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থা একান্ত অপরিহার্য। এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকালে মনে রাখতে হবে এক বিভাগের কর্মকাণ্ডে যাতে অন্য বিভাগের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় বা জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত না হয়। সকল বিভাগের কর্মকাণ্ডে দেশ ও জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক এবং সমন্বয় খুবই জরুরি। তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং সহযোগী।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে দেশের ইতিহাসে প্রথম সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ক্রান্তিকালেই যখন প্রয়োজন হয়েছে তখন সুপ্রিম কোর্ট তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানকে রক্ষা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারি করে সংবিধানকে নানাভাবে কাঁটাছেড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছিলো। কিন্তু এদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। স্বৈরশাসকরা তাদের পতনের পূর্বে অবৈধভাবে সংসদকে ব্যবহার করে সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তাদের সমস্ত অপকর্মকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা হতে দেয়নি।
বিচার বিভাগকে রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগ, সংবিধান ও আইনের যে ব্যাখ্যা প্রদান করে তা দেশের সকল আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগের আইনের ব্যাখ্যা অধস্তন সকল আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। সুপ্রিম কোর্টের রয়েছে জুডিশিয়াল রিভিউ এর ক্ষমতা। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অন্ত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।