বিএনপির সব নেতাদের পদত্যাগের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সব নেতাদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি পদত্যাগ আমাদের করতে বলেন, আট বছরে আট মিনিটের জন্য রাস্তা গরম করতে পারেননি, উত্তাপ সঞ্চার করতে পারেননি। এই ব্যর্থতার জন্য আপনাদের টপ টু বটম সবার দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার উচিত।’

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের ৬৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহ্বান।

ওবায়দুল কাদের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কোনদিকে ইশারা-ইঙ্গিত করে সরকারকে পদত্যাগ করতে বলেছেন, আমরা জানি। বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়। পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের পঙক্তি ‘মানুষের শক্তি যত কমে আসে, তার মুখের বিষ তত উগ্র হয়’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এদের শক্তিটা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান বিদেশে, ভাইস চেয়ারম্যান বিদেশে, কবে আসবেন অনিশ্চিত। কেউ জানে না। টেমস নদীর পাড়ে বসে বসে চোরাগলি খুঁজছেন, কোন গলি দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায়।”

তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সরকার হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকারের জনপ্রিয়তায় ইর্শান্বিত হয়ে বিএনপি এখন পদত্যাগের প্রলাপ বকতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, একটা-দুইটা আঘাতে স্তিমিত হওয়ার দল আওয়ামী লীগ নয়। শেখ হাসিনা সরকারের ভিত এবং আওয়ামী লীগের ভিত অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। আঘাত করে আমাদের পরাজিত করা যাবে না। আমরা সেই শক্তি, যারা অতলের কিনারা থেকে সবার প্রতীজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে যাই সামনের দিকে। আমাদের প্রতিজ্ঞা এখনো দুর্বল হয়নি।

‘আমাদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। ফখরুল ইসলাম সাহেব আপনার মনের জ্বালা আমরা বুঝি, কষ্টটাও বুঝি। বারবার আন্দোলনের ডাক দিয়ে, মরা গাঙ্গে জোয়ার আর আসে না। এই মরা গাঙ্গে জোয়ার কবে আসবে কেউ জানেও না। ঈদের পর ঈদ যায়। মাসের পর মাস। কেবল ডাক আসে। কিন্তু সব ডাকেই আষাঢ়ের তর্জন গর্জনের সার হয়ে যায়।

শেখ কামালের বহুমাত্রিক প্রতিভার বিভিন্ন দিক তুলে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের তার আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে এতগুলো গুণের সমাহার যার মধ্যে ছিল তিনি হচ্ছেন শেখ কামাল। তোমাদের রোল মডেল কি, তিনি হতে পারেন না? বাংলার তরুণ সমাজের জন্য শেখ কামাল এখনও প্রাসঙ্গিক। ৪২ বছর পরও তিনি আমাদের রোল মডেল। বাংলার তরুণ সমাজে তার মতো কোন তরুণকে এত প্রতিভা নিয়ে চলতে দেখিনি।

ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এত মেধাবী? এখন তো সব ছাত্রনেতাই মেধাবী? আমরা যে এসএসসি-এইচএসসিতে মেরিট লিস্টে ছিলাম তারপরও আমাদেরকে (রবিউল আলম মুক্তাদির চৌধুরী) মেধাবী বলেননি। তখন এসব কথা বলার দরকার ছিল না। যার মেধা আছে তা সবাই জানবে। মেধাবী ছাত্রনেতা, পরে হয়ত দেখা গেল তিনি থার্ড ডিভিশন? সেও মেধাবী এটা চালু হয়ে গেছে। আর এখন বলে, রাজপথ কাঁপানো ছাত্রনেতা? কি কাঁপাল রাজপথ? এখন রাজপথ কাঁপাবার দরকারটা কিসের? তাহলে কেন বলেন, খুশি করার জন্য। এটার দরকার নাই।

সে নেতা হিসেবে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারছে কি না, তার নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা আছে কি না? বক্তব্যের মধ্যে পলিটিক্যাল ফ্লেভার আছে কি না? ভবিষ্যৎ এবং বাস্তবকে বোঝার ক্ষমতা আছে কি না? সহকর্মীদের সাথে নিয়ে টিমওয়ার্ক করার যোগ্যতা আছে কি না? সেটা দেখবেন বলে উল্লেখ করেন কাদের।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ও শেখ কামালের বন্ধু মমতাজ হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।