ভোট বানচাল চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে এক থাকুন: প্রধান উপদেষ্টা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রের অংশ। এর মাধ্যমে নির্বাচনকে বানচাল করে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এই আহবান জানান তিনি।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।

এসময় দলগুলোর নেতারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ও নির্বাচন নস্যাৎ হতে দেওয়া হবেনা। সব দল মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সমাবেশ করবে।

বৈঠকে হাদির ওপর হামলার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাদির ওপর হামলা পূর্ব পরিকল্পিত। এর মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করতে চায় তারা। ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সব দলের সঙ্গে এক থাকবে বিএনপি। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।

এসময় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তার জন্য সরকারকে আহবান জানান তিনি।

এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, সবাই মিলে সুন্দর একটি নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।যেন বিশ্বের কেউ বলতে না পারে বাংলাদেশ নির্বাচনের দেয়ার মতো পরিবেশ নেই।

তিনি বলেন, সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেবো না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না।

জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, সম্প্রতি সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলবো? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।

আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।