ভোলায় প্রতিদিন পাওয়া যাবে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

ভোলার শাহবাজপুরের টবগী-১ অনুসন্ধান কূপে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমন তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। গ্রাহক পর্যায়ে এর মূল্য ১১ টাকা করে যদি ধরি, তবে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো পাওয়া যাবে এখান থেকে। আর যদি এলএনজির মূল্য ধরি, তাহলে অনেক মূল্য হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, পর্যায়ক্রমে ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২ দুটি কূপ জুনের মধ্যে খনন কাজ শেষ করতে পারব। আশা করছি, জুনের পরে এ দুই কূপ থেকে ৫৫ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস আমরা পাব।

সরকার দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধানে কাজ করছে। ২০২২-২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট ভোলা জেলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের টবগী-১ অনুসন্ধান কূপটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন লক্ষে কাজ শুরু হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তিন হাজার ৫২৪ মিটার গভীরতায় খনন কাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে।

‘খনন পরবর্তী কূপে সম্ভাব্য গ্যাস মজুত ও উৎপাদন হার নির্ধারণে কারিগরি পরীক্ষা ডিএসটি কার্যক্রম ১ নভেম্বর শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ডিএসটি কার্যক্রমে ৩২/৬৪ ইঞ্চি চোক সাইজ ব্যবহার করে কূপটি থেকে হতে গড়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস প্রবাহ পরীক্ষা করা হয়েছে। যা আশাব্যঞ্জক।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রে থেকে টবগী-১ কূপ এলাকাটি আনুমানিক ৩ দশমিক ১৭ কিমি দূরে। ভূতাত্ত্বিক তথ্যাদি এবং ডিএসটি প্রতিবেদন অনুযায়ী এ অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সম্ভাব্য মজুত প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। দৈনিক গড় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় কূপটি থেকে ৩০-৩১ বছর গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে।

‘টবগী-১ কূপে গ্যাসের মজুদ বিবেচনায় গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৫৯ দশমিক ৮ কোটি টাকা। যা এলএনজি আমদানি মূল্য বিবেচনায় বহুগুণ। আগামী ৭ নভেম্বর নাগাদ কূপটি দ্রুত উৎপাদনক্ষম করার লক্ষ্যে কূপের কমপ্লিশন এবং ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এ প্রকল্পের আওতায় আগামী জুন ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও ২টি কূপ (ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২) খনন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ৩টি কূপ হতে সর্বমোট দৈনিক ৪৬ থেকে ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে।

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, আগামী তিন মাস লোডশেডিং কমে আসবে। শিগগিরই এ অবস্থার পরিবর্তন হবে। আগের চেয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ ভালো হবে।