মা-মেয়ের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে পর্ণসাইটে আপলোডের হুমকি, অতঃপর শ্রীঘরে ২

রাজিব শর্মা, চট্টগ্রাম : নগরীর এক মা ও তার মেয়ের আপত্তিকর দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে সেগুলো পর্ণসাইটে আপলোডের হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করে আসছে দুই তরুণ।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে নগরীর পাঁচলাইশ প্রবর্তক সংঘের পাহাড়ে ও নন্দনকানন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ অভিষেক সেন শর্মা (২১) ও আদিত্য বড়ুয়া (১৮) নামক
দুই তরুণকে গ্রেফতার করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নগরীর কোতোয়ালি থানার কবি কাজী নজরুল ইসলাম রোডের টিপু বাড়ির মৃত টিংকু সেন শর্মার ছেলে। সে নগরীর বেসরকারি ইন্ডিপেডেন্ট ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্র। এবং আদিত্য মহিম হেরিটেজের সমর বড়ুয়ার ছেলে। সে নগরীর সেন্টপ্লাসিড স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসির শিক্ষার্থী। গতকাল ৭ এপ্রিল বুধবার সকালে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, কলেজ পড়ুয়া ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ও তার মায়ের ম্যাসেঞ্জারে এবং হোয়াটসঅ্যপে ২৯ মার্চ রাতে এক যুবক ভিডিও বার্তা পাঠায় । এতে দেখা তাদের দুজনের পোশাক পাল্টানোর কিছু আপত্তিকর দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে।

এসময় ওই যুবকের সাথে যোগাযোগ করলে সে এ ভিডিও আরো বিভিন্ন জনের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়েছে এবং যদি টাকা দিতে অস্বীকার করে তাহলে বিভিন্ন পর্ণসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অাপলোড করবেন বলে হুমকি দেন। পরে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ও তার মা নগরীর পাঁচলাইশ থানায় যোগাযোগ করে একটি মামলা দায়ের করেন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে এসে অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে টিম বিশেষ অভিযানে বুধবার সকালে দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

সিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন দুজনকে গ্রেফতারের তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, উক্ত অভিযোগের সূত্র ধরে আমাদের টিম প্রথমে নগরীর পাঁচলাইশ থানা প্রবর্তক সংঘের পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মামার বাসা থেকে অভিষেককে গ্রেফতার করি।

এসময় তার মোবাইল ফোন তল্লাশী করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে আপত্তিকর দৃশ্যের  ভিডিওসহ মোবাইল ডিভাইসটি জব্দ করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় আদিত্য নামে আরেক তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে ভিডিওটি বিভিন্ন জনের ম্যাসেঞ্জারে ছড়িয়ে দিয়েছে।

পরে নগরীর কোতোয়ালি থানার ১ নং নন্দনকানন এলাকার তার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে আদিত্য বড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ফেসবুকের ফেইক আইডির সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত দুজনেই ভিডিওধারণের সত্যতা স্বীকার করেন যার উদ্দেশ্যে ছিল ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা।

গ্রেফতারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে-১২ এর বিভিন্ন ধারায় পাঁচলাইশ থানায় মামলা করা হয়েছে এবং যথাযত আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আসিফ।