
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের হওয়া সামরিক চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার বিকেলে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশই সামরিক চুক্তি করেছে, কিন্তু তারা তাদের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করেন।’
‘আমরা আশা করি, আমাদের সরকারও জনগণের জন্য তা প্রকাশ করবেন। কারণ দেশের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন’, বলেন বিএনপির এই নেতা।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ভারতের সাথে সমঝোতা স্মারক : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘নাগরিক ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা বলছেন চীনের সঙ্গে বিএনপি সরকার সামরিক চুক্তি করেছিল গোপনে। আসলে চীনের সঙ্গে অস্ত্র কেনাবেচার চুক্তি হয়েছিল। এছাড়া চীন আমাদের জন্য বিপজ্জনক নয়। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সীমানা নেই।’
ভারত প্রতিবেশী দেশের জন্য সুবিধার না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চীন-পাকিস্তানের যুদ্ধ চলছে। এমনকি নেপালের সঙ্গে রাজনৈতিক ঝামেলা রয়েছে। চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ বাধলে আমাদের ভূমি ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করব না।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক চুক্তির প্রয়োজন ছিল না দাবি করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এ দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহায়তা রয়েছে। তাহলে কিসের জন্য সমঝোতা করতে হয়েছে? ভারত-বাংলাদেশ রূপরেখার মধ্যে কী আছে, তা আমাদের জানা নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আক্রান্ত হলে ভারত-মিয়ানমারের হাতে আক্রান্ত হবে। তাই আমাদের উচিত, সামরিকভাবে নিজেদের পায়ের ওপর দাঁড়ানো।’
সরকার সারাবিশ্ব থেকে বন্ধুহীন হয়ে পড়ায় ভারতের সঙ্গে সামরিক সমঝোতা চুক্তি করেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘সামরিক বিষয় নিয়ে কেউ আলোচনা করেন না। আজ দেশের প্রয়োজনে আলোচনা করা হচ্ছে। দেশপ্রেমের কারণে সাবেক সেনা কর্মকর্তারা দেশের এমন পরিস্থিতে কথা বলছেন।’
আলোচনা সভায় বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর নিজেদের সক্রিয়তার মধ্যে ডিফেন্স পরিকল্পনা থাকে। আমাদেরও তাই রয়েছে। কিন্তু ভারতের সেনাসদস্যরা আমাদের ট্রেনিং ও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জানার যে অধিকার পেয়েছেন, তাতে আমাদের নিজস্ব বলে কিছু থাকবে না।’
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও রাষ্ট্রপতি ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। যেন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোনো কিছুতে না বলতে পারেন।’
সামরিক চুক্তির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সেনাবাহিনী যদি আমাদের গোপনীয়তা জেনে যায়, তাহলে আমরা নিরাপত্তাহীন হয়ে যাব।’
সংগঠনের সভাপতি মেজর (অব.) এম সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, মেজর (অব.) নূর হোসেন, মেজর (অব.) সাঈদ, মেজর (অব.) মুরাদ হামিদ খান প্রমুখ।