হাসপাতালের লিফট বিকল, কাঁধে করে ৬ তলায় রোগী পরিবহণ

ঠাকুরগাঁও সদর আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ছয়তলা ভবনের লিফট দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়েছে। লিফট অকেজো হওয়ায় ছয়তলা ভবনে উঠানামা করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী, স্বজন, চিকিৎসকসহ স্টাফরা। কাঁধে করে ৬ তলায় রোগী পরিবহণ করতে হচ্ছে।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে বিকল লিফট সচল করতে গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে কথা বলছেন তারা।

জানা যায়, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালটির ছয়তলা ভবনটি ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়। এর প্রায় ২০ মাস পর নতুন ভবনটি প্রশাসনিকভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত বিভাগ। বিভিন্ন সময়ে নানা সংকট নিয়ে চলতে থাকা হাসপাতালের কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুটি লিফট। প্রায় সময় লিফট দুটি নষ্ট থাকায় রোগী ও তার স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এছাড়া এ ভবনের র‌্যাম্প সিঁড়ি না থাকায় লিফট বন্ধ থাকলে ভবনের অন্যান্য তলায় মুমূর্ষু রোগীদের আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় চরম বিড়ম্বনা।

রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, স্বজনরা তাদের রোগীদের পঞ্চম তলায় মেডিসিন ওয়ার্ড ও চতুর্থ তলায় সার্জারি ওয়ার্ডে সিঁড়ি বেয়ে রোগীকে নিতে হচ্ছে ট্রলি কিংবা স্বজনদের কোলে ভর করে। এ অবস্থা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মর্জিনা বেগম বলেন, পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে ডাক্তারের ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু এ বয়সে ৫ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে উপরে ও নিচে নামতে গিয়ে আবার অসুস্থ বোধ করছি। মনোয়ারা বেগম নামে আরেক রোগীর স্বজন জানান, তার বাবাকে ছয়তলার কেবিনে ভর্তি রেখেছেন। আজ দেখতে গিয়ে তিনি একই বিড়ম্বনায় পড়েন এবং সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে হাঁপিয়ে ওঠেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক জানান, লিফটে ভিড় থাকায় ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ও উঠতে পারিনি। পরে পায়ে হেঁটে ৬তলা ভবনের রোগী দেখে এসেছি।

একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন সদরের জগন্নাথপুর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য পাঁচতলায় যেতে গিয়ে লিফটের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। লিফটে গিয়ে ভিড় ঠেলে উঠতে না পেরে মাকে কোলে করে ওঠাতে হয়েছে, যা বেশ কষ্টকর ছিল।

আসমা খাতুন নামে আরেক রোগীর স্বজন বলেন, মাকে নিয়ে ১০দিন হলো হাসপাতালে। এ সময় লিফট নষ্ট থাকায় দিনে খাবার, ওষুধসহ ৮-১০ বার উঠতে নামতে গিয়ে প্রচণ্ড রকম কষ্ট পেতে হয়। লিফট ওঠা নামার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা পদ রায় বলেন, ১৫ দিন ধরে একটি লিফট বন্ধ থাকায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি সৃষ্টি হওয়ায় একটি লিফট বিকল হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে লিফটি সচল হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জেলা গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে।