৬৫ লাখ টাকা লুট, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ সদস্য বরখাস্ত

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৬৫ লাখ টাকা লুটের হোতা সাভার ডিবি উত্তরের দুই সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, ডিবি পুলিশ পরিচয় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নগদ ৬৫ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় সাভারের ঢাকা উত্তর ডিবি পুলিশের দুই সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্যকে গত সপ্তাহে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের রিকমেন্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হলে বৃহস্পতিবার তাদের সাসপেন্ড করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

তারা হচ্ছেন- গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা হেলাল উদ্দিন, শরিয়ত উল্লাহ শাওন এবং র‌্যাব সদস্যরা হলেন- ফরিদ, মিজান ও মুকিদুল। তারা র‌্যাব-১০ সিপিসি-২-এ কর্মরত।

এছাড়াও এ ঘটনায় মাইক্রোবাস চালক কবির হোসেনকে আটক ও ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও জব্দ করেছে করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা উত্তর ডিবির ইন্সপেক্টর জালাল উদ্দীন এবং মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার।

সূত্র জানায়, গত ৭ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার রানিখাল ইউনিয়নের তিন দোকান বাজারের অদূরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আকাশ অসীমের কাছ থেকে আটককৃতরা নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ সদস্য’ পরিচয় দিয়ে স্বর্ণ বিক্রির নগদ ৬৫ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নেয়।

এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা করা হলে তদন্তের ভার দেওয়া হয় উপ-পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেনকে। পাশাপাশি ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।

তদন্তের শুরুতেই মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের অন্তত ৫০টি পয়েন্টের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে শনাক্ত করা হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস।

এ ঘটনায় গত শনিবার দিনভর সাভারে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় মাইক্রোবাসের চালক কবির হোসেনকে। জব্দ করা হয় মাইক্রোবাসটি। তদন্তের সূচনাতেই বেরিয়ে আসে আটককৃতদের সংশ্লিষ্টতা। একে একে আটক করা হয় ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্য ও র‌্যাবের ৩ সদস্যকে। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে তাদের রাখা হয় মুন্সীগঞ্জের পদ্মা উত্তর থানায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৩টায় অভিযানে যাবার কথা বলে ঢাকা জেলা উত্তর ডিবির সদস্য হেলাল উদ্দিন ও শরিয়ত উল্লাহ শাওন মাইক্রোবাসটি ভাড়া করেন।

নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক সাভার মাইক্রোবাস মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে তারা মাইক্রোবাস ভাড়া নিতেন। এ ঘটনা প্রকাশ পাবার পর অন্যান্য চালকদের সঙ্গে আমরা কথা বলে জানতে পারি এর আগেও তারা এভাবে মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে ‘ডিবি পরিচয়ে’ ডাকাতি করতেন।

মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক বিশ্লেষণ করে তারা এই চক্রটির সন্ধান পেয়েছেন। তবে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্যরা জড়িত থাকায় বিব্রত পুলিশ প্রশাসন। বৃহস্পতিবার তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।