Share this:
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা সমপরিমাণ সহায়তা কার্যক্রম ঘোষণা করেছেন গ্রামীণফোন। এর অংশ হিসেবে এক কোটি গ্রাহকের জন্য ১০ কোটি ফ্রি মিনিট ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি।
গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নানা উদ্যোগ ও অবদানের মাধ্যমে চিকিৎসক, গ্রাহক এবং ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন। পূর্ববর্তী নানা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা হিসাবে নতুন এসব উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আজ পর্যন্ত গ্রামীণফোনের সকল প্রতিশ্রুত উদ্যোগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
শুরু থেকেই করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা করা এবং সে অনুযায়ী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটি অবদান রাখছে বলেও জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাদের আগে কখনও এমন সংকটপূর্ণ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি। এমন একটি সঙ্কট আসবে এবং সেটি এভাবে আমাদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেটা কেউই চিন্তা করতে পারেনি। তাই এখন সময় সবাই একসঙ্গে এর মোকাবিলা করা। ধৈর্য, বোঝাপড়া, সহানুভূতি নিয়ে আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমাদের সবার জন্য একটি পরীক্ষা এবং আমার বিশ্বাস, একতাবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে এ চলমান সঙ্কট মোকাবিলা করা সম্ভব। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারি নানা কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সংস্থাসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পখাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাকে সত্যিকার ভাবে উৎসাহিত করেছে।
গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
ইয়াসির আজমান আরো বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তায় অনুকরণীয় সব উদ্যোগ গ্রহণে গ্রামীণফোন -ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই, ব্র্যাক, বিটিআরসি, ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং শিল্পখাতের অন্যান্য অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।
করোনা মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধাদের ধারাবাহিক সহায়তার অংশ হিসাবে এ পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত ২৫ হাজার চিকিৎসকদের সহযোগিতা কার্যক্রম আরও প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামীণফোন। এ কার্যক্রমের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত চিকিৎসকদের ১ টাকা টোকেন মূল্যের বিনিময়ে প্রতিমাসে ৩০ জিবি ইন্টারনেট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন। নির্ধারিত চিকিৎসকদের জন্য এই সুবিধা আগামী ছয় মাস চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও এপ্রিল মাসে রিচার্জ করতে পারেননি বা যাদের ব্যালেন্স নেই বললেই চলে এমন শনাক্তকৃত গ্রাহকদের ১০ কোটি মিনিটি ফ্রি টক টাইম (গ্রাহক প্রতি ১০ মিনিট) দেওয়া শুরু করেছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটির এ উদ্যোগ মূল্যবান গ্রাহকদের তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগে সহায়তা করবে। জরুরি সেবাদাতা হিসেবে গ্রামীণফোন এ সঙ্কটকালীন সময়ে তাদের সাড়ে ৭ কোটি গ্রাহকের জন্য সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি মিনিট কলরেট ৪৮ পয়সা করেছে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে ডেটার ব্যবহার বৃদ্ধি মূল্যায়ন করেছে গ্রামীণফোন। যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম, ব্যবসা -বাণিজ্য এ জরুরি সেবা চলছে ইন্টারনেট উপর ভিত্তি করে তাই মাইজিপি অ্যাপ থেকে কেনা সকল সাপ্তাহিক ডাটা প্যাকে ১০০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন।
এ প্রতিকূল সময়ে গ্রাহক সেবাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন গ্রামীণফোনের খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের কথা চিন্তা করে এ সঙ্কটের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গ্রামীণফোন ১০ কোটি টাকা সমমানের সেফটি-নেট ক্রেডিট স্কিমের ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা খায়রুল বাসা থেকে অংশ নিয়ে এসব বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেন।
সে সময় আরো জানানো হয়, এসব উদ্যোগের পাশাপাশি, দেশের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় গ্রামীণফোন ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা ‘ডাকছে আমার দেশ’ উদ্যোগের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এ কার্যক্রমে গ্রামীণফোন ইতিমধ্যে ১ লাখ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকার খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক ও সাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্ধারিত হাসপাতালে ৫০ হাজার প্রফেশনাল পিপিই দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
