অন্য চিহ্ন দিলে ব্যালট বাতিল : জেলা পরিষদ নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালটে কোনো চিহ্ন দিলে তা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। তিনি বলেছেন, ভোট কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে কিছু স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এসেছে জানিয়ে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ‘শিগগির’ তাদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলায় স্থাপিত কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। দেশে প্রথমবারের মতো এ নির্বাচনে স্থানীয় সরকারের সিটি, পৌর, উপজেলা ও ইউপি জনপ্রতিনিধিরা ভোট দেবেন।

ইতোমধ্যে এ নির্বাচনকে ঘিরে অনেক এলাকায় সরকার দলীয় সাংসদ ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীরা ভোট কেনা বেচা ও নানা পদ্ধতি ব্যবহারে চাপ দিচ্ছেন বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, ‘কিছু প্রার্থী ও সরকার দলীয় সাংসদ নানাভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে- এমন অভিযোগ লিখিত ও মৌখিকভাবে আমরা পেয়েছি। কেউ বলছেন ক্যামেরায় ছবি তুলে আনতে, কেউ বলছেন ব্যালট পেপারের পেছনে বিশেষ চিহ্ন দিতে।’

এ ধরনের কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন,‘ ভোটের আর দু’দিন রয়েছে। সাংসদদের কাছে অনুরোধ করছি-আপনার এলাকা থেকে চলে আসেন। আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে কেউ প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যেই হোন না কেন অনিয়ম করলে ছাড় দেওয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যাতে ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের অনিয়ম করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি ভোটকক্ষের সামনেই একজন করে নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রাখা হচ্ছে। কোনো ভোটার বা জনপ্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোটারকে তল্লাসি করে তা নিশ্চিত করবে। ব্যালট পেপারের কোথাও পরিচিতিমূলক চিহ্ন ব্যবহার করলে তা বাতিল করা হবে।’

ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি জানান, আইন শৃ্ঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সদস্য এবং অনেক জেলায় ভোটকেন্দ্রের কাছাকাছি বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ড এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য থাকবে।

৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট হচ্ছে এবার। প্রতি জেলায় চেয়ারম্যান একজন, সাধারণ সদস্য ১৫টি ওয়ার্ডে ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটারের এ নির্বাচনে জেলা ও উপজেলায় ওয়ার্ডভিত্তিক ৯১৫টি কেন্দ্র রয়েছে।

ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন; কুষ্টিয়া জেলায় চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর আদালতের আদেশে তা স্থগিত করা হয়।

নির্দলীয় এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে অনেক জেলায়। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এ নির্বাচনের সমালোচনা করে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।