উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিতে হবে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল

সচিবালয় প্রতিবেদক : সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালগুলোর শিক্ষার কার্যক্রম যাচাই করে এ বিষয়ে স্বীকৃতি দেবে।

অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠনের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত একটি নতুন আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এই আইন। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে আইনটি কেবিনেটে উপস্থাপন করা হলে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। আইনটি নিয়ে তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল।

সচিব বলেন, নতুন এই আইনের ৬ ধারায় কাউন্সিল গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে- একজন চেয়ারম্যান, চারজন পূর্ণকালীন এবং আটজন খণ্ডকালীন সদস্য নিয়ে ১৩ সদস্যের ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ হবে। আর আটজন খণ্ডকালীন সদস্য প্রত্যেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক মনোনীত হবেন। এই আট সদস্য হবেন কমিশনের একজন পূর্ণকালীন সদস্য, সরকার কর্তৃক মনোনীত যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, সরকার স্বীকৃত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন পেশাজীবী প্রতিনিধি, একজন বিশিষ্ট শিক্ষা উদ্যোক্তা, সরকার মনোনীত শিক্ষা অনুরাগী, সরকার মনোনীত তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং পুর্ণকালীন সদস্যরা এই কাউন্সিলের সার্বিক কাজ পরিচালনার দায়িত্ব থাকবেন জানিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, আইনে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে ২৫ বছরের শিক্ষকতা, অধ্যাপক হিসেবে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা।

কাজের পরিধি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউন্সিলের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম যাচাই করে এ বিষয়ে স্বীকৃতি দেওয়া। দেওয়ার মতো না হলে তারা স্বীকৃতি দেবে না, প্রয়োজন হলে স্থগিত কিংবা বাতিল করতে পারবে। তবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে গেলে রিভিউয়ের সুযোগ থাকবে।

নতুন এ কাউন্সিল ইউজিসির সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’ হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হবে না। এটি একটি ছোট প্রতিষ্ঠান। আর ইউজিসি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান।’

বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৮টি পাবলিক ও ৯৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই কাউন্সিলের স্বীকৃতি পেতে হবে। অ্যাক্রেডিটেশন সনদ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান অ্যাক্রেডিটেশনপ্রাপ্ত বলে প্রচার করতে পারবে না। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়া কোনো সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারবে না।

গত ২৮ মার্চ মন্ত্রিসভায় এ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এটি অনুমোদনের ফলে সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট সবার অবগতির জন্য কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এর মাধ্যমে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে রিভিউ আবেদন করতে পারবেন।