তাদের সময় শেষঃ ফখরুল ইসলাম

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার যতই চেষ্টা করুক তাতে তারা সফল হবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) সময় শেষ।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব‌্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল ফের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করে আপনারা (সরকার) এদেশের মানুষকে বোকা বানাবেন, আবার ক্ষমতায় টিকে থাকবেন; সেটা এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।’

‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, হাসিনা আপনার সময় শেষ। যতই ভন ভন করে ঘুরতে থাকেন, আপনার কোনো লাভ হবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এখন মূলমন্ত্র হচ্ছে চুরিতন্ত্র। প্রত্যেকটা ব্যাংককে চুরি করে এমন একটা অবস্থা করেছে যে, এখন ব্যাংকের আমানতকারীরা বলছে ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি।’

‘গতকাল একটি সংবাদপত্রের হেডলাইন এসেছে- পদ্মাসেতুর তলানি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মাত্র দুইটা পিলার দাঁড় করে রেখেছে, এর ওপর স্লাভ দিয়ে রেখেছে। ওইটা নাকি স্বপ্ন? পত্রিকায় ইঞ্জিনিয়াররা বলেছে, আমরা তলানি খুঁজে পাচ্ছি না। ইতিমধ্যে এই সেতু নির্মাণে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি চলে গেছে’, বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘মগবাজার-মালিবাগ উড়াল সেতুতে ৩০০ কোটি টাকা থেকে ১৮০০ কোটি টাকা চলে গেছে। প্রত্যেকটা মেগা প্রজেক্টে তারা (সরকার) দেশের টাকার লুট করে নিচ্ছে। বর্গী দেশের মধ্যে এসে গেছে, ওরা এদেশের সব লুট করে নিয়ে যাবে। আজকে তারা এই অবস্থা তৈরি করেছে। সেই আওয়ামী লীগ আবার সততার কথা বলে।

বিদেশে খালেদা জিয়ার যে সম্পদের কথা বলা হয়েছে তার প্রমাণ দিতে না পারলে আইনি ব‌্যবস্থার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।

‘কোথা থেকে ভুয়া টেলিভিশন, ভুয়া কাগজ, ভুয়া অনলাইন দিয়ে আমাদের নেত্রী বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রের কথা বলে। আমরা তো বলেছি, প্রমাণ করুন। করেননি বলে গতকাল উকিল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যদি ৩০ দিনের মধ্যে প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এত সোজা না, সবাইকে শুধু বোকা বানানো যাবে না।’

আগামী সরকার গঠন করবে বিএনপি : সভায় প্রধান অতিথি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সারাদেশে রব উঠেছে আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এবং সরকার গঠন করবে। সেজন্য তারা দিশেহারা হয়ে ২০১৪ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় দ্রুত বিচার করে তাকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

‘আমরা বলতে চাই, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে এবং চলবে। প্রভুত্ব রাজনীতির সরকারের যে দলালি, সেটাও চলছে। সমস্ত চক্রান্তের মধ্যে বিএনপিকে এগিয়ে যেতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খুব দ্রুত বিচার কাজ চলছে, তাকে সাজা দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের পরবর্তী করণীয় এখনই ঠিক করে নেমে পড়তে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না রেখে সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের সংগঠন গুছিয়ে সংগ্রামের জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র সহসভাপতি শামসুল হুদা, উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন বক্তব্য রাখেন।