নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আ.লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না, জেনে নির্বাচন যাতে না হয়, দলটি সে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, এ কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ দাবি থেকে জনগণকে দূরে সরানো যাবে না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার দুপুরে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বনানীতে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন মির্জা ফখরুল।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশের জনগণ ভোটে যাবে না, মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে জাতীয় নির্বাচন যাতে না হয়। সত্যিকার অর্থে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে তারা আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সেজন্যই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে সংবিধান সংশোধন করেছে।’

‘আমরা নির্বাচনকালীন সময়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই, সমান সুযোগ চাই। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করবে না’, বলেন বিএনপির মহাসচিব।

যতই নিপীড়ন-নির্যাতন করা হোক না কেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি থেকে জনগণকে দূরে সরানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শিক্ষার্থী ওপর হামলা ‘আওয়ামী লীগের চরিত্র’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ‘আওয়ামী লীগের চরিত্র’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তা আওয়ামী লীগের চরিত্র। এটা ছাত্রলীগের নতুন কোনো ব্যাপার না। তারা বহুবার শিক্ষকদেরকে মেরেছে, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মেরেছে।’

‘যখনই তাদের বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিক্টোরিয়াল অথরিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তখনই তাদের হাতিয়ার হয়ে তারা (ছাত্রলীগ) আক্রমণ করেছে গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর। প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আজকে ক্ষমতাসীন সংগঠনটি এ অবস্থা চালু করেছে। এটা শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নয়, সমগ্র দেশে, সমগ্র সমাজে, সমগ্র রাষ্ট্রে তারা জোর করে, মাস্তানি করে, গুণ্ডামি করে ক্ষমতা দখল করে থাকতে চায়,’ বলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীসহ প্রতিদিন নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘এর উদ্দেশ্য একটাই- বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। এ অবস্থা চলবে না, এ অবস্থা কখনোই চলবে না।’

এ সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, আমিনুল হক, মীর সরফত আলী সপু, শাহ নুরুল কবির শাহিন, কাইয়ুম চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম বাবু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে কবরস্থানের বাইরে ‘আরাফাত রহমান কোকো যুব ক্রীড়া পরিষদ’ ও ‘আরাফাত রহমান স্মৃতি পরিষদ’ এর যৌথ উদ্যোগে ‍গরিব ও দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন বিএনপি মহাসচিব।

সকালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা কোকোর কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

২০১৫ সালে ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরাফাত রহমান কোকো। তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালনে বিএনপির উদ্যোগে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসা ‘ফিরোজা’ এবং চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল এবং কবর প্রাঙ্গণে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়।