বিশ্বব্যাংকের ঋণের ঘোষণায় টিআইবির উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামী তিন বছরে দুই বিলিয়ন ডলার দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বৃহস্পতিবার এক  বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দরিদ্র ও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশে থাকাকে বিশ্বব্যাংক ঋণ ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছে, যা অগ্রহণযোগ্য। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে অনুদান প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরকালে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতায় গুরুত্ব আরোপ করায় তাকে স্বাগত জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যদি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে বিশ্বব্যাংকের প্রকৃত অভিপ্রায় থাকে, তাহলে বাংলাদেশের ওপর অধিকতর ঋণের ভার ও বোঝা চাপানো থেকে বিশ্বব্যাংককে বিরত থাকতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত অর্থ বাংলাদেশ যেন দ্রুত পেতে পারে, সেই প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংক ইতিবাচক ভূমিকা পালনের উপায় খোঁজার প্রয়াস গ্রহণ করতে পারে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে আছে। ঋণ প্রদানকারী এরূপ মেগা সংস্থার ঋণ ও সুদ বাবদ অতিরিক্ত বোঝা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতের শিকার এ দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন বা যুক্তি কোনোটাই নেই। যদিও সম্ভাব্য সর্বনিম্ন সুদ ও সর্বোচ্চ রেয়াতি সুবিধার মাধ্যমে এ ধরণের ঋণ প্রদান করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে তার ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণে আগ্রহী হলে, ব্যাংকটির প্রতি আমাদের আহ্বান- জনস্বার্থের এমন ক্ষেত্রগুলো তারা চিহ্নিত করুক, যেখানে জলবায়ু অর্থায়নের ন্যায় সুদমুক্ত অনুদান পাওয়া সম্ভব নয়। সবুজ জলবায়ু তহবিলের মতো সূত্র থেকে অনুদান প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের অভিগম্যতাকে সহজতর করার ক্ষেত্রে তার সম্ভাব্য সামর্থ্য এবং দক্ষতার সদ্ব্যবহার করলে বিশ্বব্যাংক ভালো করবে।’

ক্ষতিপূরণ হিসেবে অনুদান দেওয়ার পরিবর্তে জলবায়ু তহবিলের নামে কোনো ঋণ গ্রহণ না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।