২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনা শ্রবণ শক্তি হারান

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রবণ শক্তি হারান।

সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে এ তথ্য তুলে ধরেন।

এদিন গ্রেনেড হামলা মামলায় যারা আহত হয়েছেন তাদের বিষয়ে আদালতে বিশদভাবে উপস্থাপন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১২০ নম্বর সাক্ষী থেকে ১৬১ নম্বর পর্যন্ত সাক্ষীদের দেওয়া সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ডান কানে রক্ত জমে যায় এবং তিনি শ্রবণ শক্তি হারান।’

এসবির এক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্যের আলোকে রেজাউর রহমান আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ২১ আগস্ট তারিখে জনসভায় বক্তব্য দেবেন, তা এসবির কর্মকর্তারা ২০ আগস্ট জানতে পারেন। কিন্তু তারা পোশাকধারী কোনো পুলিশের নিরাপত্তা ঘটনাস্থলে দেখেননি।’

এদিকে, এদিন যুক্তিতর্ক শেষ না হওয়ায় বিচারক মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌসুলির সঙ্গে মো. আকরাম উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, মো. আমিনুর রহমান, আবু আব্দুল্লাহ ভূইয়া প্রমুখ ছিলেন।

গত ১১ অক্টোবর মামলাটিতে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

এর আগে মামলাটিতে গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি হয়। আত্মপক্ষ শুনানিতে ৩১ আসামির সকলেই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ জন আসামী পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।

মামলাটিতে আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন।

অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক। এ মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নান ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের নির্মম মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি হারান।