২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবহীন ও নিষ্ঠুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে : ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবহীন ও নিষ্ঠুর বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংসদ বেগম নাসিমা ফেরদৌসীর (মহিলা আসন-১৩) তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিরোধী দলকে নিশ্চহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল। এই হামলায় মহিলা লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আহত শত শত দলীয় নেতা-কর্মী দু:সহ সেই স্মৃতি আজও শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই মামলা বর্তমানে রায় দেয়ার পূর্ববর্তী ধাপ অর্থাৎ যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫২ জন আসামির মধ্যে ১৮ জনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। বাকি আসামিদের যুক্তিতর্ক শেষ হলেই এই মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার একজন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু ও তার ভাই মো. তাজউদ্দিন এই মামলার অন্যতম আসামি। গ্রেনেড হামলা চলাকালে টিয়ার গ্যাস শেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয় এবং গ্রেনেড হামলার পর যখন জানতে পারে আমি বেঁচে আছি, তখন সেই রাতেই তাজউদ্দিন ও আরো কয়েকজনকে বিদেশে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। যেখানে গ্রেনেড হামলা হয়, সেই স্থানের সকল আলামত পরদিনই সরিয়ে ফেলা হয়। রাস্তা ধুয়ে ফেলা হয় এবং অন্যান্য আলামত নষ্ট করা হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন গ্রেনেড হামলা মামলার প্রকৃত আসামিদের আড়াল করা জন্য তথাকথিত জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে চার্জশিট দাখিল করে। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, জজ মিয়াকে এই নাটকে অংশ নেওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে যেনতেনভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে ২১ আগস্ট, ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকল আসামিকে অন্তর্ভূক্ত করে চার্জশিট দেয় এবং ২০১৪ সাল থেকে আরো ১৬৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এভাবে মোট ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে মামলাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’

সাংসদ সেলিনা বেগমের (মহিলা আসন-৬) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। গঙ্গা-ব্রক্ষ্রপুত্র-মেঘনা নদী বিধৌত বাংলাদেশের নদী ভাঙন অন্যতম সমস্যা। দেশের বড় নদীগুলো ক্রমাগত তার চ্যানেল পরিবর্তন করে। এর ফলে নদী তীরের অবস্থান পরিবর্তন হয়। ফলে নদী ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের দুর্দশা দূর করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধ কল্পে গত নয় বছরে (২০০-০৯ হতে ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত) ৫৫৩ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণের কাজ সম্পন্ন করেছে।’