খালেদা জিয়ার দুই মামলা পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ৬ জুলাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলা পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ৬ জুলাই ধার্য করেছেন আদালত ।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আকতারুজ্জামান আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এদিন ঠিক করেন ।

মামলা দুটির মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আত্মপক্ষ শুনানি আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটিতে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদকে খালেদা জিয়ার পক্ষে পুনরায় জেরার জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য বেলা পৌনে ১১টায় আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। এরপর মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

শুরুতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরা শুরু করেন আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান এবং আমিনুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন। এদিন জেরা শেষ না হওয়ায় বিচারক অবিশিষ্ট জেরার তারিখ ৬ জুলাই ধার্য করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলাটিতে হাইকোর্টের দেওয়া পুনরায় তদন্তের আবেদন খারিজ করার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করা হয়েছে। যা শুনানির জন্য আগামী ৩ জুলাই ধার্য রয়েছে জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন আইনজীবীরা।

ওই মামলায়ও সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী ৬ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন।

এরপর বেলা দেড়টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ ছেড়ে যান খালেদা জিয়া ।

এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে আসাকে কেন্দ্র করে বকশী বাজার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী রাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। এদিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আদালতে হাজির হন রুহুল কবীর রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

আর আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী, সানাউল্লাহ মিয়া, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, হেলাল উদ্দিন, হান্নান ভূঁইয়া প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, প্রাক্তন এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।