‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্য আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ।

জেনেভায় অনুষ্ঠিত এইড ফর ট্রেড গ্লোবাল রিভিউ-২০১৭ সম্মেলনে এক গোলটেবিল সেশনে তিনি এ কথা বলেন।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে জেনেভায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন-২০২১ সফল বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে মধ্য আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করবে।

তিনি বলেন, মধ্য আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৩২ মিলিয়ন মানুষ এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৬৭.২৫ মিলিয়ন।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পাঁচ হাজারের বেশি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে গ্রামের মানুষ ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করছে। বাংলাদেশে এখন ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইতিমধ্যে পাঁচশোর বেশি কোম্পানি অনলাইনে বাণিজ্য পরিচালনা করছে।

‘সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে অন্যতম রপ্তানি খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকার যেসব খাতকে রপ্তানিতে উৎসাহিত করছে, তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি অন্যতম। এটি একটি সম্ভাবনাময় আইটি সেক্টরে রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এ খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত ও দক্ষ যুবশক্তি এ সেক্টরে দক্ষতা ও সফলতার সাথে কাজ যাচ্ছে।

বাংলাদেশের সকল সেক্টরে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার কাজ সফলভাবে এগিয়ে চলছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন কাজের টেন্ডারের ৮০ ভাগ এখন অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। পেপার লেস অফিস ব্যবস্থাপনার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত দেশগুলোতে এ ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবল, অর্থ এবং কারিগরি সহযোগিতা। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পাদিত কাজের ৮০ ভাগ এখনো দেশের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ। মাত্র ২০ ভাগ আন্তঃদেশীয়ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ডিজিটাল কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে উন্নয়ন সহযোগিদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে বর্ডার টেরিফ, লজিস্টিকস, কাস্টমার সিকিউরিটি, সাইবার নিরাপত্তা, ট্যাক্স, ইন্টারনেট প্লাটফর্ম করণ ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ালে ই-কমার্স এর জনপ্রিয়তা দ্রত বৃদ্ধি করা সম্ভব।

‘২০০৬ সালে আইসিটি অ্যাক্ট, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ২০১০ করা হয়েছে, এ ছাড়া ২০১১ সালে আইসিটি রুল, আইসিটি পলিসি ২০১৫ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সফলতার সাথে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নলেজ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এর ভাইস প্রেসিডেন্ট বামবাং সুসানতনো এর সঞ্চালনায় বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন কিরগিস্থানের মিনিস্টার অফ ইকোনমি আর্জিবেক কোঝোশিভ, সামোয়ার বাণিজ্য, শিল্প ও শ্রম বিষয়ক অ্যাসোসিয়েট মিনিস্টার টুইফা আসিসিনা মিসা লিসাটি লিলিইসিইয়াও পেলিমেনি এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার স্থায়ী প্রতিনিধি মিজ টান ই ওয়ান প্রমুখ।