নীলফামারীতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন  ব্যাংক যাদুরহাটে রাখার দাবী

আল-আমিন, নীলফামারীঃ নীলফামারী সদর চাপড়া সরমজানি ইউনিয়নের যাদুরহাটে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক রাখার দাবী হাজারো মানুষের। ব্যাংকটি হঠাৎ করে রাতের আঁধারে কাগজপত্র গুছিয়ে নিয়ে চলে যায় প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে বাবরীঝাড় নামক স্থানে। সেখানেও সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বাবড়ীঝাড় দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচে একটি রুমে ব্যাংকের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। বিদ্যালয়ে ব্যাংক চলছে এ নিয়ে মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদিকে যাদুরহাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক যাদুরহাট শাখায় হাজার হাজার গ্রাহক লেনদেন করেছিলেন সচ্ছতার মধ্যে দিয়ে। কিছু অসাধু মানুষের চক্রান্তে হঠাৎ করে এক রাতেই ব্যাংকটি নিয়ে যান বাবড়ীঝাড় স্কুলে। বাবড়ীঝাড় ব্যাংকটি যাওয়ায়, যাদুরহাট এলাকার ব্যবসায়ী, সাধারণ জনগণ, প্রতিবন্ধী সহ হাজার হাজার মানুষ অসুবিধায় ও দুর্ভোগে পড়েছে। ব্যাংকটি ১৯৮৯ সাল থেকে যাদুরহাটে সুনামের সহিত কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তাই সকলের দাবী ব্যাংকটি আবারো যাদুরহাটে ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেন ব্যংকের কার্যক্রম চালাতে গেলে এখন আমাদের ফ্লাট ২য় তলা ভবন লাগবে। সেটি জানার পর ব্যাংকের জন্য যাদুরহাটের স্থানীয় লোকজন মনোরম পরিবেশ ও নিরাপত্তা বেষ্টিত ২য় তলা ফ্লাট নির্মানও করেছেন। কিন্তু নিরাপত্তা বেষ্টিত ফ্লাট রেখে চলে যান বাবড়ীঝাড় দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
এ বিষয়ে চাপড়া সরমজানি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল্যাহ মিয়া বলেন, যাদুরহাট কৃষি ব্যাংটি সুনামের সহিত ১৯৮৯ সাল থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। রাতের আঁধারে হঠাৎ করে কিছু অসাধু কর্মচারী কর্মকর্তারা ব্যাংকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাবড়ীঝারে নিয়ে যান। যাদুরহাটে ২য় তলা ভবন থাকা সত্বেও, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিভাবে ব্যাংক চলে এটা আজব ব্যপার। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করছি। আমাদের জোর দাবী যাদুরহাটেই ব্যাংক কার্যক্রম চালাতে হবে।
 ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাহবুর রহমান ক্ষোভ কন্ঠে বলেন, ব্যাংকটি রাতে হঠাৎ করে অন্যত্রে চলে গেলো আমরা স্থানীয় লোক কেউ জানি না। যাদুরহাটে ব্যাংকটি ৩৪ বছর থেকে আছে সুনামের সহিত। ব্যাংকের জায়গার জন্য আমরা ২য়তলা ফ্লাট বানিয়েছি তবুও তারা এখান থেকে চুপ করে চলে গেলো কিছু অসাধু মানষের চক্রান্তে। আমাদের দাবী যাদুরহাটেই ব্যাংক থাকতে হবে।
স্থানীয় ব্যক্তি আসাদুল ইসলাম ও মাহবুল ইসলাম বলেন,যাদুরহাটে ব্যাংকটি অনেক নিরাপত্তার মধ্যে ছিল। এখন যেখানে গিয়েছে বাবড়ীঝাড় স্কুলে সেখানে কোন নিরাপত্তা নেই। যাদুরহাটে দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সহিত চলছে ব্যাংকের কার্যক্রম। আমরা আবারো কৃষি ব্যাংকটি ফিরিয়ে চাচ্ছি যাদুরহাটে।
প্রতিবন্ধি শফিকুল ইসলাম বলেন, যাদুরহাটে সুনামের সহিত ব্যাংকটি চলছে। এখন হঠাৎ করে বাবড়ীঝাড় স্কুলে চলে যায় ব্যাংকটি। স্কুল হলো লেখাপড়ার জায়গা, কিন্তু সেখানে কিভাবে ব্যাংকের কার্যক্রম চলবে। আমরা সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যাংকটি আবারো যাদুরহাটে স্থানান্তরের দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার মোঃ জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যাদুরহাটে টিনসেট ঘর হওয়ায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেয়ে বাবড়ীঝাড়ে আনা হয়েছে। তবে যাদুরহাট শাখা নামেই চলবে। স্কুল কমিটি ভাড়া দিয়েছে বলে সেখানে কার্যক্রম চলছে।
জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে কোন ব্যাংক চলতে পারে না। বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।