হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলা, ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনায় যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার গভীর রাতে সংগঠনটির কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।

সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সঞ্জুর মোর্শেদ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মহসিন আহমেদ শিপন (৩৫) এবং মোগলটুলি এলাকার নূর মোহাম্মদ স্বপন (৪০)। তারা দুজনই যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

এ বিষয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী বলেন, রোববার রাতে আমরা কুমিল্লার কান্দিরপাড় ফাঁড়ির ইনচার্জের মাধ্যমে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করি। পরে সেটি মামলা আকারে গৃহীত হয়েছে। আমরা হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর রাতেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা নিয়ে এমপি বাহারের মন্তব্য, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউয়ের রাজস্থলী মন্দির এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। মিছিল সমাবেশে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অংশগ্রহণকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে যাচ্ছিল। এ সময় মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী মিছিলকারীদের ধাওয়া করে। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর মিছিলকারীরা রানীর বাজার ও মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে অবস্থান নেন। এ হামলায় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মিছিলে অংশ নেওয়া ৫-৬ জন আহত হন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিচার দাবিতে রোববার কুমিল্লায় এসেছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এতে ঘটনার বিচার দাবি করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান নেতারা। পরে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা চলে যান ঠাকুরপাড়া শ্মশান কালীবাড়ি মন্দিরে। সেখানে গিয়ে হামলায় আহতদের খোঁজ-খবর নেন এবং ঐক্য পরিষদের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।