দেশে বৃহত্তম করোনা হাসপাতালের সুবিধা সমূহ

রাজধানীর মহাখালীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা জন্য এখন পর্যন্ত দেশের বৃহত্তর করোনা হাসপাতালের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ (রোববার) সকালে “ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল” উদ্বোধন করা হয়।

এক হাজার বেডের এই হাসপাতালে রোগীরা যেসব সুবিধা পাচ্ছে-

হাসপাতালটিতে যা যা থাকছে:

হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) থাকছে। এছাড়াও ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০ নারী), ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থা রয়েছে। এই রুমগুলো হবে অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রুতই বেডের সংখ্যা আরও বাড়বে। আইসিইউ সাপোর্টের যে ফেইজ আছে তার অধিকাংশই ইতিমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেগুলো যুক্ত করে খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

উদ্বোধনের পর দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হবে। পুরো কাজ শেষ হওয়ার পরে আসলে সবাই বুঝতে পারবে যে বড় মানের একটা কিছু হলো।

রোগীরা যেভাবে ভর্তি ও সেবা নেবে:

কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন বা উপসর্গ আছে- এমন রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তারা প্রথমে হাসপাতালের ট্রায়াজে প্রবেশ করবেন। সেখানে দুটি জোন আছে।

মৃদু উপসর্গ রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা:

যাদের মৃদু উপসর্গ আছে বা হেঁটেই আসতে পারছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের যদি ভর্তি প্রয়োজন না হয় তবে ভর্তি করা হবে না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হবে। পরে এসে তিনি আবার রিপোর্ট করতে পারবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা:

যারা করোনা সংক্রমিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসবে তারা ট্রায়াজ-২ এ চলে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। ছয় বেডের একটা আইসিইউ সেটাপ থাকবে নিচ তলাতেই। সেখানে ভেন্টিলেটরের সুযোগও থাকছে। আর তাই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের স্ট্যাবল হওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠিয়ে দেওয়া হবে দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ডে। সেখানে যদি কারও অবস্থা খারাপ হয় তবে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে আইসিইউ বা এইচডিইউতে। আর যদি একটু স্ট্যাবল হয় বা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসে তাদের কেবিনে দিয়ে দেবো। এই কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ হাই-ফ্লো নজেল ক্যানোলা সুবিধা থাকবে। এক্ষেত্রে মনিটরের ব্যবস্থাও করা হবে খুব দ্রুত। ওখানে তারা কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাদের ধীরে ধীরে ডিসচার্জ হওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এটাই আপাতত স্টেপ-১ ও স্টেপ-২ পরিকল্পনা।

হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন:

হাসপাতালটি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাসপাতাল হবে। এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন কাজ করবে। হাসপাতালের জনবল, আর্থিক সহায়তা, ওষুধসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে সর্বাত্মক সহায়তা দিবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আর্মড ফোর্সেস থেকেও চিকিৎসক, নার্সসহ কিছু থাকছে। ডিএনসিসি তাদের জায়গা দিয়েছে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কিছু সাপোর্ট দিয়ে আমাদের সাহায্য করে যাচ্ছে। মূলত এই তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলেই হাসপাতালটি পরিচালিত হবে ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স, ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ, সরঞ্জামের ব্যবস্থা করছে মন্ত্রণালয়।