শান্তিরক্ষা অপারেশন ক্রমশই চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল হয়ে পড়ছে

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, অরাষ্ট্রীয় শক্তির উত্থান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক সঙ্কট এবং পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থনের কারণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশন ক্রমশই চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আয়োজনে ঢাকা সেনানিবাসস্থ মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে রবিবার অনুষ্ঠিত হয় দেশি ও বিদেশি সামরিক এবং বেসামরিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে ‘আর্মি চিফস কনক্লেভ’ শীর্ষক সেমিনার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে আয়োজিত বহুজাতিক সামরিক অনুশীলন ‘শান্তির অগ্রসেনা’র অংশ হিসেবে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনার এসব কথা বলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শান্তি রক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কমিউনিটি-বেজড ইনফর্মেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, জাতিসংঘ সনদের পরিমার্জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অব কাঠামো তৈরির ওপর জোর দেন।

ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বর্তমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরে তা মোকাবেলায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, জাতিসংঘের মতবাদের নমনীয়তা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, যথোপযুক্ত লজিস্টিকস সহায়তা নিশ্চিত করণ এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাজেট বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রতি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘উন্নত প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরূপ প্রয়োগ এবং চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে শান্তিরক্ষার প্রকৃতি রূপান্তরিত হয়েছে। এই নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারির ফলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অর্থবহ পারস্পরিক সহযোগিতা, নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসম্পর্কিত জরুরি অবস্থার উন্নয়ন অতীব প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

সেমিনারে নৌ ও বিমানবাহিনীর এবং বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, কূটনৈতিক ও সিনিয়র সম্পাদক/সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারী এবং উপস্থিত অতিথিরা আগামী দিনগুলোতে বিশ্বে বিভিন্ন সংঘর্ষ মোকাবেলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মতবিনিময় করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অন্যতম প্রধান সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আয়োজিত এই সেমিনার ভবিষ্যতে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।